ডিজিটাল মার্কেটিং আসলে কী? ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে কি বোঝায়?

ডিজিটাল মার্কেটিং আসলে কী? ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে কি বোঝায়?

ডিজিটাল মার্কেটিং শব্দটার সাথে আমরা কমবেশী সবাই পরিচিত। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং কি বা কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয় এইটা অনেকেই জানেন না। খুব সহজ ভাষায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলো, ডিজিটাল ডিভাইস ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপনার প্রডাক্ট অথবা সেবার তথ্য আপনার টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেয়া। এটি সব থেকে সহজ ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সজ্ঞা বা মানে।

ডিজিটাল মার্কেটার- আপেল মাহমুদ রিয়াদ

৫ বছরের বেশী বয়সের কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের রেভিনিউ এর ১২% থেকে ২২% ব্যয় করেন মার্কেটিং এর কাজে। এবং মোট মার্কেটিংবাজেট  এর ৫৬% ব্যয় করা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজে। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর ২৫% ব্যয় করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের জন্য।

মার্কেট সাইজঃ

২০২২ সাথে এর মার্কেট সাইজ ছিল ৩২১ বিলিয়ন ডলার এবং এর Compound Annual Growth Rate (CAGR) ছিল ১৩.১%। তাই ধারণা করা হয় ২০২৬ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যেই এর মার্কেট সাইজ হবে ৬৭২ বিলিয়ন ডলার।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এর অন্যতম প্রধাণ কারন অবশ্য আমরা নিজেরাই। আমরা প্রতিনিয়ত ডিজিটাল লাইফস্ট্যাইলে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। আমরা অনেক বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করি। একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ ঘন্টা ৫৮ মিনিট ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে থাকেন। কাজেই হিসেব টা এখানে একেবারেই পরিস্কার। ট্রাফিক যেখানে বেশী সময় ধরে থাকে, ডিজিটাল মার্কেটিং সেখানেই হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক গুলো চ্যানেল এবং বিভিন্ন রকমের টুলস নিয়ে কাজ করা হয়। আজকে জনপ্রিয় কয়েকটি টুলস নিয়ে জানবো। এবং আমি চেষ্টা করবো খুব সহজ ভাবে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে।

এসইও (Search Engine Optimization)

এসইও (Search Engine Optimization) :

 ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম জনপ্রিয় একটি চ্যানেল হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও। খুব সহজ ভাষায় যদি বলি,  আমরা যখন কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কিছু খুঁজি তখন আমরা বিভিন্নওয়েব সাইট থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেয়ে থাকি। যেসব ওয়েবসাইটে প্রপারলি এসইও করা থাকে সেসব ওয়েবসাইটের তথ্য আমরা সার্চ পেজের প্রথম দিকে পেয়ে থাকি। আপনি জেনে হয়তো অবাক হবেন প্রতিদিন গুগলে প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন সার্চ হয়। তাই আপনার ব্যবসার প্রসারে ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই মাধ্যমটি কতটা দরকারি সেটা হয়তো বলার অপেক্ষায় রাখেনা। বিজনেস এর ধরন অনুযায়ী, প্রডাক্ট এর বৈশিষ্ট্য এর উপর ভিত্তি করে সম্ভ্যব্য কিওয়ার্ড রিসার্স করে সেসব কিওয়ার্ড বিভিন্ন ভাবে ওয়েবসাইট বিভিন্ন অংশে প্রপারলি বসিয়ে দেয়ার কাজটি কে অন পেজ অপটিমাইজেশন বলা হয়ে থাকে। আমরা পরবর্তি বিভিন্ম ব্লগএ এসইও এর ব্যপারে আরো বিস্তারিত শিখতে পারবো।

এছাড়াও আমি আপনাদের জন্য তৈরি করছি ডিজিটাল মার্কেটিং এর ফান্ডামেন্টাল থেকে এডভান্স লেভেলের বিভিন্ন ধরণের ভিডিও কনটেন্ট। প্লে-লিস্ট এর ভিডিও গুলো দেখেও আপনারা ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেসিক বিষয় শিখতে পারবেন।

স্যোসাল সাইট মার্কেটিং

স্যোসাল সাইট মার্কেটিং:  

সোশ্যাল সাইট মার্কেটিং বলতে বোঝায় সোশ্যাল সাইট ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের মার্কেটিং করা। সেটা হতে পারে পেইড অথবা অর্গানিক। আমি আগেই বলেছি একজন মানুষ এই সময়ে গড়ে প্রতিদিন প্রায় 6 ঘন্টা 58 মিনিট ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করেন।  এবং অধিকতার সময় তারা থাকেন সোশ্যাল সাইটে। আরে কারণেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সবথেকে বেশি জনপ্রিয় । 

সোশ্যাল মিডিয়াতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে প্রচারণা করা হয় সব থেকে বেশি। 

এছাড়াও আপনার যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রেজেন্স থাকে এবং সেখানে যদি অনেক বেশি পরিমাণ ট্রাফিক থাকে তাহলে আপনি সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট ক্রিয়েট করে অর্গানিক ওয়েতে আপনার বিজনেস কে প্রমোট করতে পারেন। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর মধ্যে রয়েছে Facebook ,LinkedIn, ইউটিউব , Instagram , TikTok ইত্যাদি।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট বিষয়টা কি প্রথমে আমরা এটা সহজভাবে একটু বুঝে নিই। ধরেন আপনার কিছু প্রোডাক্ট আছে আপনার ওয়েবসাইটে আপনি সেগুলোকে শোকেস করেছেন তো একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটের বা কোন একজন ব্যক্তি যিনি আপনার প্রোডাক্টগুলো নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বিক্রি করবেন এবং এর বিনিময়ে আপনি তাকে কিছু কমিশন প্রোভাইড করবেন। সহজ ভাষায় এটাই হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা বিভিন্ন ওয়ার্ক প্লেসে বিভিন্ন বিজনেসের অ্যাফিলেট প্রোগ্রাম এ যুক্ত হয়ে নিজে এক্সপার্টিজট শো করে সেই সকল সাইটের প্রোডাক্ট বিক্রি করে থাকেন। এবং আপনার বিজনেসের গ্রো তে এবং আপনার প্রোডাক্ট বিক্রিতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিন্তু এভাবে অনেকটা ভূমিকা রাখতে পারে। 

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিংঃ

 ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম একটি প্রধান মার্কেটিং হচ্ছে email মার্কেটিং । ইমেইল ব্যবহার করে যে ধরনের মার্কেটিং করা হয় তাকে ইমেইল মার্কেটিং বলা হয়। প্রোডাক্ট এবং সেবা উভয়ের ক্ষেত্রেই এই মার্কেটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।  তবে ধারণা করা হয় প্রোডাক্ট এর থেকে সেবা বিক্রির ক্ষেত্রে ইমেইলের নিউজ লেটার অনেক বেশি কাজে দেয়। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর এটা অনেক বড় জায়গা দখল করে আছে ইমেইল মার্কেটিং। 

কনটেন্ট মার্কেটিংঃ

 বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা নিয়ে আছে এই কন্টেন্ট মার্কেটিং। সময়ের সাথে এই কন্টেন্ট মার্কেটিং এর চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। কনটেন্ট মার্কেটিং এর  content বলতে স্ট্যাটিক ইমেজ কনটেন্ট অথবা ভিডিও কনটেন্ট অথবা যে কোন কন্টেন্ট কে বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ কনটেন্ট কনটেন্ট এর মাধ্যমে যে মার্কেটিং হয় তাই কনটেন্ট মার্কেটিং । 

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং:

  বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক অনেক অনেক বড় একটা জায়গা জুড়ে রয়েছে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।.  সাধারণভাবে ইনফ্লুয়েন্সার বলতে তাদেরকেই বোঝায় যারা অন্যকে ইনফ্লুয়েন্স করতে পারে । কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভাষায় ইনফ্লুয়েন্সার সেই সকল ব্যক্তি যারা তাদের ইনফ্লুয়েন্স কে কাজে লাগিয়ে আপনার প্রোডাক্ট অথবা সেবা কে প্রমোট করতে পারে।  যদিও এটা অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবেই হয়ে থাকে তবে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এদের আধিপত্য সব থেকে বেশি অনলাইনে।  একজন ইনফ্লুয়েঞ্জ স্যার সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে তাদের ফ্যান ফলোয়ারকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের প্রমোশনের কাজগুলো করে থাকে। অ্যাওয়ারনেস কনসিডারেশান কনভারশন মার্কেটিং ফানেলের এই তিন ধাপকেই চমৎকারভাবে এক্সিকিউট করতে পারে একজন  ইনফ্লুয়েন্সার। 

এছাড়ো রয়েছে, এপ মার্কেটিং, পেইড সার্চ, ডিস্প্লে এড মার্কেটিং, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা বিভিন্ন ব্লগে আরো বিস্তারিত ভাবে এই ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে শিখবো। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *