আপনারা জানেন ফেসবুক বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যম।আমরা সবাই ফেসবুক ব্যবহার করি।ফেসবুক ব্যবহার করেন না এমন মানুষ হয়ত আপনি খুঁজেই পাবেন না।সবচাইতে জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায় আমরা এটা ব্যবহার করায় একদিক থেকে যেমন সাচ্ছন্দ্যবোধ করি আমরা কমিউনিকেশন করি ঠিক একইভাবে আমাদের অনেক সময় ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়ে যায়। অনেকগুলো কারণে ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হতে পারে। আজকের ফেসবুক একাউন্ট যাতে হ্যাক না হয় সে কারণে যা যা করণীয় তা শিখবো।আজকে এমন ৫ টি টিপস শিখবো আপনারা যদি ৫ টি টিপস ফলো করেন এই ৫ টি টিপস মেনে চলেন। তাহলে বলা যেতে পারে আপনার একাউন্টটি মোটামুটি নিরাপদ থাকবে।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিন:
আমরা অনেক সময় যেটা করি ফেসবুক একাউন্ট খোলার সময় খুবই নরমাল একটা পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকি মানে খুবই সহজ একটা পাসওয়ার্ড। আমি অনেককেই জিজ্ঞেস করেছি তারা বলে যে তারা পাসওয়ার্ড মনে না থাকার কারণে সহজ পাসওয়ার্ড দেয়। এটা একটি বাজে অভ্যাস । কারণ শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিলে একাউন্ট এর নিরাপত্তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কিভাবে দেবেন? প্রথমেই মনে রাখতে হবে পাসওয়ার্ডটি যেনো ১৫-২০ ডিজিট এর হয়। এবং এই পাসওয়ার্ড এর মধ্যে আপনি বিভিন্ন রকম ক্যারেক্টার ইনপুট করবেন।স্পেশাল ক্যারেক্টার @,#, a,b,c,A,B,C এর পর আপনি নাম্বার যেগুলো 1,2,3,4এগুলো দেবেন। যখন আপনার পাসওয়ার্ডটি অনেকগুলো ক্যারেক্টারের সম্মিলনে হবে তখন পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই শক্তিশালী হবে। এবং পাসওয়ার্ডটি যেনো মিনিমাম ১৫-২০ ডিজিট এর হয় সেইদিকে আপনার খেয়াল রাখতে হবে।
নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন:
আমরা এই কাজটি কখনোই করি না। আমাদের নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা উচিৎ সেটা হতে পারে মাসে একবার অথবা দুই মাসে একবার, কোনোভাবেই যদি না পারেন অন্তত ছয় মাসে একবার পরিবর্তন করতেই হবে।নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি আপনার একাউন্ট এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন। অর্থাৎ আপনি যদি রেগুলার আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে থাকেন আপনার একাউন্ট অবশ্যই নিরাপদ থাকবে।
ফেসবুকের সিকিউরিটি ইনএ্যাবল করুন:
ফেসবুকে কিন্তু বিভিন্ন সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে অবশ্যই সেগুলো ইনএ্যাবল করা উচিৎ। যেমন : লগ ইন এপ্রুভাল কিভাবে কাজ করে, নতুন কোনো ডিভাইস অথবা ওয়েবসাইট থেকে আপনার একাউন্ট এ লগ ইন করতে হবে তখন আপনার ডিভাইস এ আপনি লগ ইন এপ্রুভ করলে তারপর তারা ওখান থেকে লগ ইন করতে পারবে।একই ভাবে টুস্টেপ ভেরিফিকেশন হচ্ছে নতুন করে কোনো ডিভাইস এ লগইন করার সময় আপনার ডিভাইস এ একটি কোড আসবে এই কোড প্রোভাইড করা হলে নতুন ডিভাইস বা ব্রাউজারে আপনার একাউন্ট লগইন করা সম্ভব হবে।এক্ষেত্রে আপনি কোড আপনার একাউন্ট নাম্বারেও নিতে পারেন অথবা বিভিন্ন অথিন্টিকেটর এপপ যেমন গুগল অথিন্টিকেটর,মাইক্রোসফট অথিন্টিকেটর এগুলোর মাধ্যমেও নিতে পারেন।মজার বিষয় হচ্ছে অথিন্টিকেটর এপ এ আমরা যখন কোনো আইডি যুক্ত করি সেখানে কোডটা কিন্তু এক মিনিট পর পর আপডেট হয়।এটা অবশ্যই ভালো একটা দিক। তাই আপনি অবশ্যই লগ ইন এপ্রুভালের সময় টুস্টেপ ভেরিফিকেশন এ আপনার নাম্বার কিংবা কেনো অথিন্টিকেটর এপপ যুক্ত করে রাখবেন।এর পর লগ ইন এলার্ট, লগইন এলার্ট চালু থাকলে আপনি মেইল এর মাধ্যমে অথবা ফেসবুক নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে দেখতে পারবেন আপনার একাউন্ট কোথায় লগইন করা হচ্ছে। এমন একটা নোটিফিকেশন পেলে আপনি সেখানে ক্লিক করে “ This wasn’t me” তে ক্লিক করে আপনি আবার আপনার একাউন্টটি নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে পারেন।
কখনোই কোনো আননোন লিংক এ ক্লিক করবেন না :
সেটা আপনার ম্যাসেঞ্জারের ইনবক্সে আসুক,অথবা কোনো গ্রুপ পোস্ট,অথবা কোথাও কোনো অপরিচিত লিংক দেখলে ক্লিক করবেন না।আমরা কি করি আমরা কোথাও কোনো লিংক দেখলে ক্লিক করি। সেই লিংক এর সাথে হয়ত কোনো চমকপ্রদ ক্যাপশন লেখা থাকে।যেমন কোনো অ্যাওয়ার্ড টাইপ কিছু থাকে যে আপনি পুরস্কার জিতেছেন এরপর থাকে বিভিন্ন অফার।তো আমি বলবো কোনো লিংকে ক্লিক করার আগে অবশ্যই লিংকটি ভেরিফাই করে নেবেন,কিভাবে লিংক ভেরিফাই করবেন লিংকে গঠন ইউআরএল দেখলেই আপনি বুঝবেন যে এটা আসলেই কোথাকার। তাই যেটা যদি আপনার আনানো হয় আপনার পরিচিত না হয় তাহলে সেটাতে ক্লিক করবেন না।অনেক সময় যেটা হয় হয়ত আমাদের খুব কাছের বন্ধু আমাদেরকে ইনবক্সে একটি লিংক পাঠিয়েছে আমরা তখন অকপটেই সেটায় ক্লিক করি।কিন্তু ঘটনা কি হয় জানেন প্রথমেই আপনার বন্ধুর আইডিটি হ্যাক করা হয় তারপর আপনাকে টেক্সট করা হয়।তাই আপনাকে অবশ্যই মেকসিওর করতে হবে যে লিংকটি আপনার বন্ধু পাঠিয়েছে এবং ঐ যে বললাম যে লিংকটা ভেরিফাই করে তারপর ক্লিক করতে হবে। একটি টিপস শিখিয়ে দেই আপনি খুব যদি মনে করেন লিংকটায় ক্লিক করা খুব জরুরি। তাহলে লিংকটা কপি করে ব্রাউজারে গিয়ে ইনকগনিটো মুডে গিয়ে তারপর সেখানে লিংকটা পেস্ট করে দেবেন।আরেকটা বিষয় হচ্ছে ফিশিং লিংকগুলোতে ক্লিক করার পর আমরা কিন্তু ফেসবুকের মতন একটা ইন্টারফেস পাই তো অনেকেই কি করে সেখানে গিয়ে ঐ ফিড এ ক্রেডেনশিয়াল যেটা ইমেইল কনটাক্ট নাম্বার পাসওয়ার্ড ইত্যাদি দেয়।এতে করে যেটা হয় হ্যাকার খুব ইজিলি এই ক্রেডেনশিয়াল গুলো যেমন কনটাক্ট নাম্বার পাসওয়ার্ড এগুলো পেয়ে যায় সো আপনাকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কখনোই কোনো আননোন লিংক এ ক্লিক করা যাবে না এবং কোনো ক্রেডেনশিয়াল প্রোভাইড করা যাবেই না।
কোনো আননোন ওয়েবসাইটে কিংবা এপে লগইন উইথ ফেসবুক করবেন না:
আমরা অনেক সময় নতুন কোনো ওয়েবসাইট কিংবা এপপ যখন ইন্সটল করি সেখানে রেজিস্ট্রেশন ফ্লীড এ আমরা দেখতে পাই লগ ইন উইথ গুগল কিংবা লগ ইন উইথ ফেসবুক এতে করে যেটা হয় আমরা যখন ঐ এপপকে ফেসবুক একাউন্ট এর এক্সেস দেই তখন তাঁরা ফেসবুক থেকে তথ্য নিয়ে সেই এপপে একাউন্ট ক্রিয়েট করে এতে যেটা হয় আমাদের সময় বেঁচে যায় আমরা খুব ইজিলি এক দুই ক্লিকের মাধ্যমে একাউন্টটা ক্রিয়েট করতে পারি।তো আপনাকে এটা খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে ওয়েবসাইটে অথবা যে এপপে একাউন্টটি খুলছেন সেই ওয়েবসাইট বা এপপ আপনার জন্য কতখানি নিরাপদ অথবা কতখানি কাজের।সেটা যদি আননোন হয় অথবা খুব বেশি পপুলার নয় হয় তাহলে আপনাদের সাজেস্ট করবো লগ ইন উইথ ফেসবুক করবেন না।আপনার যেটা করতে পারেন সেটা হলো আপনি নতুন করে মেইল এড্রেস দিয়ে নতুন একাউন্ট করবেন। হ্যা হয়ত আপনার সময় বেশি যাচ্ছে আপনার সময় লাগছে কিন্তু আপনার ফেসবুকের নিরাপদের স্বার্থে আপনি সেটা করতেই পারেন।
এই ৫ টি টপিস আপনি যদি ফলো করেন তাহলে মোটামুটি বলা যায় আপনার ফেসবুক একাউন্টটি অবশ্যই নিরাপদে থাকবে।আপনার ফেসবুক একাউন্টটি নিরাপদে থাকুক সেই প্রত্যাশায় শেষ করছি।